জানাযার_নামাযের_পদ্ধতি।


 


# জানাযার_নামাযের_পদ্ধতি :

---------------------------------------------

হযরত ইমাম আবু হানীফা রহ. এর মত হচ্ছে, জানাযার নামাযে সূরা ফাতেহা পড়া সুন্নত নয়। বরং প্রথম তাকবীর বলে ছানা পড়বে, দ্বিতীয় তাকবীর বলে দুরূদ শরীফ পড়বে, তৃতীয় তাকবীর বলে দুআ পড়বে এবং চতুর্থ তাকবীর বলে সালাম ফিরাবে। হ্যাঁ, ছানা হিসেবে (অর্থাৎ ছানার পরিবর্তে) সূরা ফাতেহাও পড়া যেতে পারে, কেরাত হিসেবে নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগণের আমল দ্বারাই একথা প্রমাণিত। এমতের দলিলসমূহ নিম্নে প্রদত্ত হল:

মারফু হাদীস

হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন,

ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻴْﺘُﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤَﻴِّﺖِ ﻓَﺄَﺧْﻠِﺼُﻮﺍ ﻟَﻪُ ﺍﻟﺪُّﻋَﺎﺀَ

অর্থ: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যখন তোমরা মায়্যিতের জানাযা পড়বে, তখন তার জন্য একনিষ্ঠভাবে দুআ কর। (আবূ দাউদ শরীফ, ২খ, ৪৫৬পৃ:)

সাহাবায়ে কেরামের আমল:

১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন,

ﻟﻢ ﻳﻮﻗﺖ ﻟﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻴﺖ ﻗﺮﺍﺀﺓ ﻭﻻ ﻗﻮﻝ ﻛﺒﺮ ﻣﺎ ﻛﺒﺮ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﻭﺃﻛﺜﺮ ﻣﻦ ﻃﻴﺐ ﺍﻟﻜﻼﻡ .

ﺃﻭﺭﺩﻩ ﺍﻟﻬﻴﺜﻤﻲ ﻓﻲ ﻣﺠﻤﻊ ﺍﻟﺰﻭﺍﺋﺪ ﻭﻗﺎﻝ : ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺣﻤﺪ ﻭﺭﺟﺎﻟﻪ ﺭﺟﺎﻝ ﺍﻟﺼﺤﻴﺢ

আমাদের জন্য জানাযার নামাযে কোন কিরাআত কিংবা কোন বাক্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হয় নি। ইমাম যখন তাকবীর বলে তখন তুমিও তাকবীর বল। আর অধিক পরিমাণে তার জন্য ভাল কথা বল। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস : ৪১৫৩) হায়ছামী বলেছেন, হাদীসটি ইমাম আহমদ উদ্ধৃত করেছেন এবং এর বর্ণনাকারীগণ সহীহ বুখারীর বর্ণনাকারী।

২. হযরত আলী রা. আমল :

ﻋَﻦْ ﻋَﻠِﻲٍّ ، ﺃَﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﺇﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﻴِّﺖٍ ﻳَﺒْﺪَﺃُ ﺑِﺤَﻤْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﻳُﺼَﻠِّﻲ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ، ﺛُﻢَّ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻷَﺣْﻴَﺎﺋِﻨَﺎ ﻭَﺃَﻣْﻮَﺍﺗِﻨَﺎ ﻭَﺃَﻟِّﻒْ ﺑَﻴْﻦَ ﻗُﻠُﻮﺑِﻨَﺎ ﻭَﺃَﺻْﻠِﺢْ ﺫَﺍﺕَ ﺑَﻴْﻨِﻨَﺎ ﻭَﺍﺟْﻌَﻞْ ﻗُﻠُﻮﺑَﻨَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻗُﻠُﻮﺏِ ﺧِﻴَﺎﺭِﻧَﺎ .

আলী রা. যখন কারো জানাযার নামায পড়তেন, তখন প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা পাঠ করতেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরুদ পড়তেন। তারপর বলতেন,

ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻷَﺣْﻴَﺎﺋِﻨَﺎ ﻭَﺃَﻣْﻮَﺍﺗِﻨَﺎ ﻭَﺃَﻟِّﻒْ ﺑَﻴْﻦَ ﻗُﻠُﻮﺑِﻨَﺎ ﻭَﺃَﺻْﻠِﺢْ ﺫَﺍﺕَ ﺑَﻴْﻨِﻨَﺎ ﻭَﺍﺟْﻌَﻞْ ﻗُﻠُﻮﺑَﻨَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻗُﻠُﻮﺏِ ﺧِﻴَﺎﺭِﻧَﺎ .

(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৪৯৪)

৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.এর আমল : উমর রা. জানাযার নামাযে কুরআন পড়তেন না।

(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫২২ )

ইমাম মালেক রহ. তাঁর মুয়াত্তায়ও হযরত ইবনে উমর রা.এর আছারটি বর্ণনা করেছেন। সেখানকার সনদ এমন : ﻣﺎﻟﻚ ﻋﻦ ﻧﺎﻓﻊ : ﺃﻥ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ অর্থাৎ ইমাম মালেক হযরত নাফে থেকে, তিনি হযরত ইবনে উমর সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। হাদীসের মূলনীতি সম্পর্কিত গ্রন্থাবলিতে এ সনদটিকে ‘সিলসিলাতুয যাহাব’ বা স্বর্ণশৃংখল বলে অভিহিত করা হয়। হাদীসটির বিশুদ্ধতা এ থেকে সহজেই অনুমেয়।

৪. হযরত আবু হুরায়রা রা.এর আমল :

আবু সাঈদ রহ. বলেন,

ﺃﻧﻪ ﺳﺄﻝ ﺃﺑﺎ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﻛﻴﻒ ﺗﺼﻠﻲ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺠﻨﺎﺋﺰ ﻓﻘﺎﻝ ﺃﺑﻮ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺃﻧﺎ ﻟﻌﻤﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﺧﺒﺮﻙ ﺃﺗﺒﻌﻬﺎ ﻣﻊ ﺃﻫﻠﻬﺎ ﻓﺈﺫﺍ ﻭﺿﻌﻮﻫﺎ ﻛﺒﺮﺕ ﻭﺣﻤﺪﺕ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺻﻠﻴﺖ উপর বউ ﻧﺒﻴﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﺛﻢ ﺃﻗﻮﻝ

তিনি আবু হুরায়রা রা.কে জিজ্ঞেস করেছেন, আপনি কিভাবে জানাযার নামায পড়েন? আবু হুরায়রা রা. বলেন, আল্লাহর কসম , আমি তোমাকে অবশ্যই তা জানাব। মৃতব্যক্তির পরিবারের সাথে আমি যাই। যখন (নামাযের জন্য) তারা তার লাশ রাখে, তখন আমি তাকবীর বলি ও আল্লাহর প্রশংসা করি, তার নবীর উপর দরূদ পড়ি অতঃপর (নিম্নোক্ত দুআটি) পড়ি ..........

ﺍَﻟﻠّﻬُﻢَّ ﻋَﺒْﺪُﻙَ ﻭَﺍﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِﻙَ ﻭَﺍﺑْﻦُ ﺍَﻣَﺘِﻚَ، ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺸْﻬَﺪُ ﺍَﻥْ ﻻ ﺍِﻟﻪَ ﺍِﻻ ﺍَﻧْﺖَ ﻭَﺍَﻥَّ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﻋَﺒْﺪُﻙَ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻟُﻚَ، ﻭَﺍَﻧْﺖَ ﺍَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﻪِ، ﺍَﻟﻠّﻬُﻢَّ ﺍِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﺤْﺴِﻨًﺎ ﻓَﺰِﺩْ ﻓِﻲْ ﺍِﺣْﺴَﺎﻧِﻪِ ﻭَﺍِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﺴِﻴْﺌًﺎ ﻓَﺘَﺠَﺎﻭَﺯْ ﻋَﻨْﻪُ، ﺍَﻟﻠّﻬُﻢَّ ﻻ ﺗَﺤْﺮِﻣْﻨَﺎ ﺍَﺟْﺮَﻩُ ﻭَﻻ ﺗَﻔْﺘِﻨَّﺎ ﺑَﻌْﺪَﻩُ

(মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৬৪২৫; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৩৭৭)

৫. হযরত উবাদা ইবনে সামেত রা. এর তালিম :

ﺃﻧﻪ ﺳﺄﻝ ﻋﺒﺎﺩﺓ ﺑﻦ ﺍﻟﺼﺎﻣﺖ ﻋﻦ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻴﺖ ﻓﻘﺎﻝ ﺃﻧﺎ ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺃﺧﺒﺮﻙ ﺗﺒﺪﺃ ﻓﺘﻜﺒﺮ ﺛﻢ ﺗﺼﻠﻲ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ، ﻭﺗﻘﻮﻝ ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺇﻥ ﻋﺒﺪﻙ ﻓﻼﻧﺎ ﻛﺎﻥ ﻻ ﻳﺸﺮﻙ ﺑﻚ ﺷﻴﺌﺎ ، ﺃﻧﺖ ﺃﻋﻠﻢ ﺑﻪ ، ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻣﺤﺴﻨﺎ ﻓﺰﺩ ﻓﻲ ﺇﺣﺴﺎﻧﻪ ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻣﺴﻴﺌﺎ ﻓﺘﺠﺎﻭﺯ ﻋﻨﻪ ، ﺍﻟﻠﻬﻢ ﻻ ﺗﺤﺮﻣﻨﺎ ﺃﺟﺮﻩ ﻭﻻ ﺗﻀﻠﻨﺎ ﺑﻌﺪﻩ .

তিনি সাহাবী হযরত উবাদা ইবনে সামেত রা.কে জানাযার নামায সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে উত্তরে তিনি বলেন, আল্লাহর কসম, অবশ্যই আমি তোমাকে বলে দিব। তুমি তাকবীর বলে শুরু করবে, এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরুদ পাঠ করবে এবং পরে এই দোয়া পড়বে-

ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺇﻥ ﻋﺒﺪﻙ ﻓﻼﻧﺎ ﻛﺎﻥ ﻻ ﻳﺸﺮﻙ ﺑﻚ ﺷﻴﺌﺎ ، ﺃﻧﺖ ﺃﻋﻠﻢ ﺑﻪ ، ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻣﺤﺴﻨﺎ ﻓﺰﺩ ﻓﻲ ﺇﺣﺴﺎﻧﻪ ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻣﺴﻴﺌﺎ ﻓﺘﺠﺎﻭﺯ ﻋﻨﻪ ، ﺍﻟﻠﻬﻢ ﻻ ﺗﺤﺮﻣﻨﺎ ﺃﺟﺮﻩ ﻭﻻ ﺗﻀﻠﻨﺎ ﺑﻌﺪﻩ .

[সুনানে কুবরা বায়হাকী, ৪ খ-, ৪০ পৃষ্ঠা]

উল্লেখ্য, বর্তমান সময়ে যারা সূরা ফাতেহাকে জানাযার নামাজের জন্য জরুরী বলে থাকেন, তারা এই হযরত উবাদা ইবনে সামেত রা.এর বিখ্যাত একটি হাদীস দিয়েই দলিল দিয়ে থাকেন। হাদীসটির ভাষ্য : ﻻ ﺻﻼﺓ ﻟﻤﻦ ﻟﻢ ﻳﻘﺮﺃ ﺑﻔﺎﺗﺤﺔ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ যে সূরা ফাতেহা পড়ে নি তার নামাযই হয় নি। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ৭৫৬) অথচ উপরোক্ত বর্ণনায় দেখা যাচ্ছে, স্বয়ং উবাদা ইবনে সামেত রা.ই সূরা ফাতেহা ছাড়াই জানাযার নামায শেখাচ্ছেন।

তাবেয়ীনদের ফাতাওয়া:

সাহাবায়ে কেরাম থেকে শিক্ষাপ্রাপ্ত তাবেয়ীগণের মধ্যে যারা শীর্ষস্থানীয়, বিশেষ করে তৎকালীন পায় প্রতিটি ইসলামী শহরের যারা বড় বড় তাবেয়ী মনীষী ছিলেন, তাদের থেকেও জানাযার নামাযে সূরা ফাতেহা না পড়ার ফতোয়া পাওয়া যায়। যেমন :

১. মক্কা মুকাররমার বিখ্যাত তাবেয়ী আতা ইবনে আবী রাবাহ এর ফতোয়া :

ﻋَﻦْ ﺣَﺠَّﺎﺝٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺳﺄﻟﺖ ﻋﻄﺎﺀ ﻋﻦ ﺍﻟﻘﺮﺍﺀﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ ﻓﻘﺎﻝ ﻣﺎ ﺳﻤﻌﻨﺎ ﺑﻬﺬﺍ ﺇﻻ ﺣﺪﻳﺜﺎ .

হাজ্জাজ রহ. বলেন, আমি আতাকে জানাযার নামাযে কুরআন পাঠ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমরা তো একথা নতুন নতুন শুনছি। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫২৭ )

২. মদীনা মুনাওয়ারার বিখ্যাত তাবেয়ী প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস ও ফকীহ হযরত সালেম ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর বলেছেন,

ﻻ ﻗﺮﺍﺀﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ .

জানাযায় কোন কুরআন পাঠ নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫৩২)

৩. মদীনার আরেক প্রখ্যাত তাবেয়ী সাঈদ ইবনুল মুসায়্যাব র. বলেন,

ﻣﺎ ﻧﻌﻠﻢ ﻓﻲ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻴﺖ ﻣﻦ ﻗﺮﺍﺀﺓ ﻭﻻ ﺩﻋﺎﺀ ﺷﻴﺌﺎ ﻣﻌﻠﻮﻣﺎ

জানাযার নামাযে নির্দিষ্ট কোন কেরাত ও দুআ আছে বলে আমার জানা নেই। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৬৪৩৬)

৪. কুফা নগরীর বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত শাবী রহ. বলেন,

ﻟﻴﺲ ﻓﻲ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ ﻗﺮﺍﺀﺓ .

জানাাযার নামাযে কুরআন পাঠ নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫২৮ )

৫. কুফার-ই আরেক প্রসিদ্ধ তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রহ. বলেন,

ﻻ ﻗﺮﺍﺀﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ ﻭﻻ ﺭﻛﻮﻉ ﻭﻻ ﺳﺠﻮﺩ ﻭﻟﻜﻦ ﻳﺴﻠﻢ ﻋﻦ ﻳﻤﻴﻨﻪ ﻭﻋﻦ ﺷﻤﺎﻟﻪ ﺇﺫﺍ ﻓﺮﻍ ﻣﻦ ﺍﻟﺘﻜﺒﻴﺮ . ‏( ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻵﺛﺎﺭ ﻟﻤﺤﻤﺪ ، ২৩৬)

জানাযার নামাযে কোন কিরাআত নেই, কোন রুকু-সেজদা নেই। বরং তাকবীর বলা শেষ হলে ডানে-বামে সালাম ফিরাতে হবে। (কিতাবুল আছার, হাদীস : ২৩৬)

শাবী রহ. বরং স্পষ্ট করে বলেছেন,

ﺍﻟﺘﻜﺒﻴﺮﺓ ﺍﻻﻭﻟﻰ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻴﺖ ﺛﻨﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺍﻟﺜﺎﻧﻴﺔ ﺻﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﺍﻟﺜﺎﻟﺜﺔ ﺩﻋﺎﺀ ﻟﻠﻤﻴﺖ ﻭﺍﻟﺮﺍﺑﻌﺔ ﺗﺴﻠﻴﻢ

জানাযার নামাযে প্রথম তাকবীর আল্লাহর প্রশংসা, দ্বিতীয় তাকবীর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরূদ পড়া, তৃতীয় তাকবীর মৃতের জন্য দুআ করা এবং চতুর্থ তাকবীর হচ্ছে সালাম ফিরানো। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস নং ৬৪৩৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৩৭৫, ১১৩৭৮)

ইমাম মুহাম্মদ রহ. কিতাবুল আছারে ইবরাহীম নাখায়ীর অনুরূপ একটি ফতোয়া উদ্ধৃত করেছেন। (নং ২৩৮)

৬. মক্কার মনীষী আতা ইবনে আবী রাবাহ আর ইয়েমেনের বিখ্যাত তাবেয়ী তাউস সম্পর্কে ইবনে তাউস বলেছেন,

ﺃﻧﻬﻤﺎ ﻛﺎﻧﺎ ﻳﻨﻜﺮﺍﻥ ﺍﻟﻘﺮﺍﺀﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ .

তারা দুজন জানাযার নামাযে কুরআন পাঠ অপছন্দ করতেন।

(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫২৯)

৭. বসরার প্রসিদ্ধ তাবেয়ী মুহাম্মদ ইবনে সীরীন রহ. থেকে বর্ণিত,

ﻛﺎﻥ ﻻ ﻳﻘﺮﺍ ﻓﻲ ﺷﻲﺀ ﻣﻦ ﺍﻟﺘﻜﺒﻴﺮﺍﺕ ﻭﻛﺎﻥ ﻳﻘﻮﻝ ...

তিনি জানাযার কোন তাকবীরে কুরআন পড়তেন না। বরং (নিম্নোক্ত দোয়াটি) পড়তেন,

ﺍَﻟﻠّﻬُﻢَّ ﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟِﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴْﻦَ ﻭَﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ ﻭَﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻲْﻥَ ﻭَﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤَﺎﺕِ ﻭَﺍَﻟِّﻒْ ﺑَﻴْﻦَ ﻗُﻠُﻮْﺑِﻬِﻢْ ﻭَﺍﺟْﻌَﻞْ ﻗُﻠُﻮْﺑَﻬُﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﻗُﻠُﻮْﺏِ ﺍَﺧْﻴَﺎﺭِﻫِﻢْ، ﺍَﻟﻠّﻬُﻢَّ ﺍﺭْﻓَﻊْ ﺩَﺭَﺟَﺘَﻪُ ﻓِﻲْ ﺍﻟْﻤُﻬْﺘَﺪِﻳْﻦَ ﻭَﺍﺧْﻠُﻔْﻪُ ﻓِﻲْ ﺗَﺮِﻛَﺘِﻪِ ﻓِﻲْ ﺍﻟْﻐَﺎﺑِﺮِﻳْﻦَ، ﺍَﻟﻠّﻬُﻢَّ ﻻ ﺗَﺤْﺮِﻣْﻨَﺎ ﺍَﺟْﺮَﻩُ ﻭَﻻ ﺗُﻀِﻠَّﻨَﺎ ﺑَﻌْﺪَﻩُ .

(মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক,হাদীস নং ৬৪৩২)

৮. আবুল আলিয়া রহ. এর ফতোয়া :

ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺍﻟْﻤِﻨْﻬَﺎﻝِ ﻗَﺎﻝَ : ﺳﺄﻟﺖ ﺃﺑﺎ ﺍﻟﻌﺎﻟﻴﺔ ﻋﻦ ﺍﻟﻘﺮﺍﺀﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ ﺑﻔﺎﺗﺤﺔ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻓﻘﺎﻝ ﻣﺎ ﻛﻨﺖ ﺃﺣﺴﺐ ﺃﻥ ﻓﺎﺗﺤﺔ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﺗﻘﺮﺃ ﺇﻻ ﻓﻲ ﺻﻼﺓ ﻓﻴﻬﺎ ﺭﻛﻮﻉ ﻭﺳﺠﻮﺩ

আমি আবুল আলিয়াকে জানাযার নামাযে সূরা ফাতেহা পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমি মনে করি, সূরা ফাতেহা শুধু সে নামাযেই পড়া যাবে যেখানে রুকু ও সিজদা রয়েছে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫২৪ )

৯. আবু বুরদা রহ. এর ফতোয়া :

ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺑﺮﺩﺓ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﺭَﺟُﻞٌ ﺃَﻗْﺮَﺃُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﺠِﻨَﺎﺯَﺓِ ﺑِﻔَﺎﺗِﺤَﺔِ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻻَ ﺗَﻘْﺮَﺃْ .

এক লোক তাকে বলল, আমি জানাযার নামাযে সূরা ফাতেহা পড়ব? তিনি তাকে বললেন, তুমি (তা) পড়বে না। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫২৬।

১০. বাক ইবনে আব্দুল্লাহ রহ. বলেন,

ﻻ ﺃﻋﻠﻢ ﻓﻴﻬﺎ ﻗﺮﺍﺀﺓ .

জানাযার নামাযে কোন কেরাত আছে বলে আমি জানি না।

(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫৩০ )

ফিকহে মালেকীর প্রসিদ্ধ কিতাব আল মুদাওয়ানাতুল কুবরা-য় সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীনের উপরোক্ত আমলের কথাই বর্ণিত হয়েছে:

ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻭﻫﺐ ﻋﻦ ﺭﺟﺎﻝ ﻣﻦ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻌﻠﻢ ﻋﻦ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﻭﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻃﺎﻟﺐ ﻭﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻭﻓﻀﺎﻟﺔ ﺑﻦ ﻋﺒﻴﺪ ﻭﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﻭﺟﺎﺑﺮ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻭﺍﺛﻠﺔ ﺑﻦ ﺍﻷﺳﻘﻊ ﻭﺍﻟﻘﺎﺳﻢ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﻭﺳﺎﻟﻢ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺍﺑﻦ ﺍﻟﻤﺴﻴﺐ ﻭﺭﺑﻴﻌﺔ ﻭﻋﻄﺎﺀ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺭﺑﺎﺡ ﻭﻳﺤﻴﻰ ﺑﻦ ﺳﻌﻴﺪ : ﺃﻧﻬﻢ ﻟﻢ ﻳﻜﻮﻧﻮﺍ ﻳﻘﺮﺀﻭﻥ ﻓﻲ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻴﺖ . ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻭﻫﺐ ﻭﻗﺎﻝ ﻣﺎﻟﻚ : ﻟﻴﺲ ﺫﻟﻚ ﺑﻤﻌﻤﻮﻝ ﺑﻪ ﺑﺒﻠﺪﻧﺎ ﺇﻧﻤﺎ ﻫﻮ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ، ﺃﺩﺭﻛﺖ ﺃﻫﻞ ﺑﻠﺪﻧﺎ ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ .

অর্থ: ইবনে ওয়াহব র. হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব, আলী ইবনে আবু তালিব, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর, ফাযালা ইবনে ওবায়দ, আবু হুরায়রা, জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ, ওয়াসিলা ইবনে আসকা রাযিয়াল্লাহু আনহুম ও কাসেম ইবনে মুহাম্মদ, সালেম ইবনে আব্দুল্লাহ, ইবনুল মুসায়্যাব, রবীয়া, আতা ইবনে আবী রাবাহ ও ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ র. সম্পর্কে বর্ণনা করেন, তাঁরা জানাযার নামাযে কুরআন পড়তেন না। ইবনে ওয়াহব বলেন, মালেক র. বলেছেন, আমাদের শহরে (অর্থাৎ মদীনায়) এর উপর (অর্থাৎ জানাযার নামাযে কেরাত পড়ার উপর) আমল করা হয় না। জানাযা তো দোয়ারই নাম। আমি আমাদের শহরের অধিবাসীদেরকে এর উপরই পেয়েছি। (দ, খ: ১ পৃ:২৬৭)

জানাযায় কোন কুরআন পাঠ নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ১১৫৩২)

দুআ হিসাবে সূরা ফাতিহা পড়া যায়:

কোন কোন হাদীসে দেখা যায়, সাহাবী ও তাবেয়ীগণের কেউ কেউ জানাযার নামাযের প্রত্যেক তাকবীরের পরই সূরা ফাতেহা পড়তেন এবং দুআ করতেন। এ থেকেও বোঝা যায়, তারা সূরা ফাতেহা কেরাত হিসেবে নয়, বরং হামদ বা প্রশংসা হিসাবেই পড়েছেন। যেমন: মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাকের বর্ণনা -

ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﻭﺃﺑﻲ ﺍﻟﺪﺭﺩﺍﺀ ﻭﺃﻧﺲ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﻭﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺃﻧﻬﻢ ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻳﻘﺮﺅﻭﻥ ﺑﺄﻡ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ ﻭﻳﺪﻋﻮﻥ ﻭﻳﺴﺘﻐﻔﺮﻭﻥ ﺑﻌﺪ ﻛﻞ ﺗﻜﺒﻴﺮﺓ ﻣﻦ ﺍﻟﺜﻼﺙ ﺛﻢ ﻳﻜﺒﺮﻭﻥ ﺍﻟﺮﺍﺑﻌﺔ ﻓﻴﻨﺼﺮﻓﻮﻥ ﻭﻻ ﻳﻘﺮﺅﻭﻥ .

আবু হুরায়রা, আবুদ্দারদা, আনাস ইবনে মালেক ও ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণিত, তারা প্রথম তিন তাকবীরের পর সূরা ফাতেহা পড়তেন, দুআ করতেন ও ইসতিগফার করতেন। এরপর চতুর্থ তাকবীর বলতেন। এবং কোন কেরাত না পড়েই নামায শেষ করতেন। (হাদীস নং ৬৪৩৭)

ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﻛﺎﻥ ﻳﻘﺮﺃ ﻓﻲ ﺍﻟﺘﻜﺒﻴﺮﺍﺕ ﻛﻠﻬﺎ ﺑﺄﻡ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ

হাসান )বসরী) র. থেকে বর্ণিত, তিনি প্রত্যেক তাকবীরের পরই সূরা ফাতেহা পড়তেন। (হাদীস নং ৬৪৩০)

সূরা ফাতিহা সুন্নাহ বলার ওয়াজাহাত:

তিরমিযী শরীফে হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত আছে,

ﺇﻧﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺃﻭ ﻣﻦ ﺗﻤﺎﻡ ﺍﻟﺴﻨﺔ

অর্থাৎ সূরা ফাতেহা পড়া সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত অথবা সুন্নতের পরিপূর্ণতা। এটি যদিও বাহ্যত পূর্বোক্ত বক্তব্যগুলোর বিপরীত মনে হয়, কিন্তু সবগুলো বক্তব্যের মাঝে সমন্বয় করলে এটাই সাব্যস্ত হয় যে, ইবনে আব্বাস রা. দুআ হিসেবেই তা পড়তেন। আর তিনি যে এটাকে সুন্নত বলেছেন, তার অর্থ হলো- নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও কখনো কখনো দুআর উদ্দেশ্যেই সেটি পড়েছেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাঝে মধ্যে যে আমল করেছেন, সাহাবীগণ সেটিকেও সুন্নত শব্দে ব্যক্ত করতেন। তিরমিযী শরীফে দুই সেজদার মাঝে বসার পদ্ধতি সম্পর্কে ইবনে আব্বাস রা.ই বলেছেন, ইকআ করা (অর্থাৎ পা খাড়া রেখে গোড়ালির উপর বসা) সুন্নত। অথচ এ আমল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হয়তো হঠাৎ কখনো করেছেন। নয়ত তাঁর সাধারণ আমল ছিল বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসা। তেমনি জানাযায়ও তাঁর সাধারণ আমল ছিল ফাতেহা না পড়া। কাজেই সুন্নত সেটাই। আর ব্যতিক্রমভাবে কদাচিৎ তিনি ফাতেহাও পড়েছেন। দোয়া হিসেবে চাইলে কেউ তা পড়তেও পারে। কিন্তু এই ব্যতিক্রম আমলকেই সুন্নত বলা এবং সে হিসেবে ফাতেহা পাঠ না করাকে সুন্নতের পরিপন্থী সাব্যস্ত করা একটি বাড়াবাড়িমূলক কর্মপন্থা। সাধারণ আমলকে পাশ কাটানোর এই একরোখা নীতি অবশ্যই পরিত্যাজ্য।

Post a Comment

1 Comments

  1. Best 7 sports toto betting in Colorado in 2021 - Sporting100
    Best 8 sports toto betting in Colorado in 2021. Brought to you by the largest sports 토토사이트 betting community in the country, Sporting100 is your number one

    ReplyDelete